হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ও উম্মতের প্রতি ভালোবাসা:
দিশেহারা, অন্যায় লিপ্ত, পথহারার পথপ্রদর্শক হিসেবে আল্লাহ তা’আলা হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে প্রেরণ করেছেন। মানবজাতির কল্যাণপুর হেদায়েতের জন্য আল্লাহর রাসূল যুগে যুগে কাজ করে গিয়েছেন।
সততা,ন্যায়-পরায়নতা, বিশ্বস্থতা ও অন্যান্য গুণাবলীর মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অন্ধকারে আলোর মতো উজ্জ্বল হয়ে রাত দিন সর্বস্তরের মানুষের সহায়ক হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন।
আরো দেখুনঃ কারবালার শহীদ হযরত আলী আকবর (আ:) এর শাহাদাত।
নবুয়তের ধারা হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু হয়ে হযরত মুহাম্মদ (সা:) পর্যন্ত সমাপ্তি হয়।
আল্লাহর দ্বীন বাঁচানোর জন্য প্রত্যেক নবী কোন না কোন পরীক্ষা দিয়ে গিয়েছেন কিন্তু সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হযরত মোহাম্মদ (সা:) দিয়েছেন।
এ জন্য কখনো কখনো কাফেরদের নিকট থেকে কঠিন যন্ত্রণার শিকার হতে হয়।
কিভাবে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ও উম্মতের প্রতি ভালোবাসা দেখাতেন?
মানুষকে মানবতা শিখতে হলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবন আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
কেননা তিনি আল্লাহর প্রিয় বান্দা এবং আল্লাহ তাআলা তাকে আমাদের জন্যে রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
“হে নবী! আমি তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।”
হে আল্লাহ, আমার উম্মত! আমার উম্মত!!’ তখন আল্লাহ বললেন, হে জিবরাঈল!
মুহাম্মাদকে গিয়ে জিজ্ঞাসা কর সে কেন কাঁদে? যদিও তোমার রবই ভালো জানেন।
অতপর জিবরাঈল (আ:) নবীজীর কাছে এসে তা জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সব খুলে বললেন।
যদিও আল্লাহ তাআলা সব জানেন। অতপর আল্লাহ তাআলা বললেন, হে জিবরাঈল!
মুহাম্মাদকে গিয়ে বলো।
আমি অচিরেই তোমার উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করব, ব্যথিত করব না (সহীহ মুসলিম)
এই উম্মতের প্রতি অগাধ ভালবাসার কারনে হযরত মুহাম্মদ (সা:) নিজের সমস্ত জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন। আল্লাহর দরবারে চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে তাদের মাগফিরাতের দুআ করতেন।
আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুল (সা.)-এর অন্তর প্রসন্ন দেখলে আমি বলতাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমার জন্য দোয়া করুন।’
তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আয়েশার আগে ও পরের, গোপন ও প্রকাশ্যে করা গুনাহ ক্ষমা করুন।’ রাসুল (সা.)-এর দোয়া শুনে আয়েশা (রা.) হেসে নিজের কোলে মাথা নিচু করে ফেলতেন।
তাঁর হাসিমাখা মুখ দেখে রাসুল (সা.) বলতেন, ‘আমার দোয়াতে কি তুমি খুশি হয়েছ?
আয়েশা (রা.) বলতেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, এটা কেমন কথা, আপনার দোয়ায় আমি আনন্দিত হব না?’। তখন রাসুল (সা.) বলতেন, ‘আল্লাহর শপথ, এভাবেই আমি প্রত্যেক সালাতের পর আমার উম্মতের জন্য আমি দোয়া করি।’ (ইবনে হিব্বান-আয়াত : ৭১১১)
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে,পৃথিবীতে যে সব নবী এসেছিল তারা প্রত্যেকে দুনিয়াতেই দোয়া কবুলিয়াত করেছিলেন আর তা কবুলও হয়েছিল।
কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ নিজের সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া কবুলিয়াত করার জন্য আখিরাতে প্রত্যেক গুনাগার উম্মতের নাজাতের জন্য তা সংরক্ষণ করে রেখেছেন।
এ থেকেই উম্মতের জন্য তার ভালোবাসার প্রকাশ পায়।